জাতীয়
দিনাজপুরে নিহত ভবেশবাবুর পুত্র হত্যা মামলা দায়ের করেছেন
২১ এপ্রিল, ২০২৫
3 মিনিট
রতন সিং দিনাজপুর থেকে।। ২২ এপ্রিল।। দিনাজপুরে আলোচিত হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা ঘটনার ৪ দিন পর তাঁর পুত্র স্বপন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রতন সিং দিনাজপুর থেকে।। ২২ এপ্রিল।। দিনাজপুরে আলোচিত হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায় হত্যা ঘটনার ৪ দিন পর তাঁর পুত্র স্বপন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে বিরল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
বাদী তাঁর মামলায় ৪ জন আসামীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় অভিযোগ করেন। বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ পরিদর্শক মো. আব্দুস ছবুর সোমবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ টায় নিশ্চিত করেন।
এই চাঞ্চল্যকর মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, জেলার বিরল উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের আব্দুল কাদের এর পুত্র আসামী আতিকুর ইসলাম (৪০), শহরগ্রামের আব্দুস সাত্তার এর পুত্র মো. রতন ইসলাম (৩০), নরসিংপাড়ার আব্দুল মাজেদ এর পুত্র মুন্না ইসলাম (২৭) এবং পাঁচশালা গ্রামের আব্দুস সাত্তার এর পুত্র রুবেল (২৮)সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলায় এই হত্যা ঘটনার সাথে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ করা হয়।
বাদী তার এজাহারে অভিযোগ করেন, আসামী আতিকুর ইসলাম ও রতন ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দাদন ব্যবসা করে আসছিল। তার পিতা নিহত ভবেশ চন্দ্র রায় গত এক বছর পুর্বে আসমাী আতিকুর ইসলামের নিকট থেকে ২৫ হাজার দাদন হিসেবে নিয়ে ছিলেন। ওই টাকার ৩ হাজার ২৫৫ টাকা প্রতি মাসে লাভ দেয়ার কথা হয়েছিল। নিহত ভবেশ প্রতি মাসে লাভের টাকা পরিশোধ করে আসছিল। কিন্তু সংসারে অভাবের কারণে গত দু'মাসের সুদের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি।
বলা হয়, আসামীগণ গত ১৭ এপ্রিল বিকাল সাড়ে ৪ টায় দু'টি মোটরসাইকেল যোগে তাঁদের বাড়ীতে আসে এবং তার বাবার সাথে প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে কৌশলে ডেকে নিয়া যায়। আসামীরা তাঁর নিহত নিহত পিতা ভবেশ চন্দ্র রায়কে তাদের সাথে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তাঁর বাবার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। এই বিষয়টি আমি জানতে পেয়ে আমার পিতার ০১৭৩৪-৯৯৭০৯৩ নাম্বার মোবাইল ফোনে আমি যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। আসামীগণ আমার বাবাকে ডেকে নিয়া গিয়ে আমার পিতাকে সুদের টাকার জন্য বিভিন্ন মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। আমার পিতা আসামীগণের মানসিক চাপের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমার পিতা অসুস্থ হয়ে পড়লে একই তারিখ রাত পোনে ৮ টার পিতার ০১৭৩৪-৯৯৭০৯৩ নাম্বার মোবাইল থেকে তাঁর ০১৫২১৭৭২৭৮০ নাম্বার মোবাইল ফোন আসে। তখন আমি ফোনটি বিছিন্ন করে পুনরায় আমার বাবার নাম্বারে ফোন করলে, আসামী রতন ফোন রিসিভ করে বলে, ‘তোমার বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় নাড়াবাড়ী বাজারে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তুমি তাকে নিয়ে যাও’। তখন আমি রতন কে বলি ‘আমি দিনাজপুর শহরে আছি আমার ঘটনা স্থলে যেতে সময় লাগবে।’ তাই আমার বাবাকে যে কোন ভাবে আমাদের বাড়ীতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলি। উক্ত সময় ০১৭৮৬-৯৮৫১৯৩ নম্বর মোবাইল থেকে পুনরায় আমার ০১৫২১-৭৭২৭৮০ নাম্বারে ফোন আসে এবং একই রূপ কথা বলে। পরে সকল আসামীগণ একটি ভ্যান যোগে আমার পিতাকে ফুলবাড়ী বাজারে এনে রাস্তার পার্শ্বে ফাঁকা যায়গায় রাখে। সে সময় আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে, আসামীগণ পালিয়ে যায়।
পরে দিনাজপুর শহর থেকে এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে আসার পর ফুলবাড়ী বাজার হতে আমার বাবাকে এ্যাম্বুলেন্স যোগে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক, আমার বাবা আগেই মারা গেছেন বলে ঘোষণা দেন। হাসপাতালে আমার নিহত বাবার সুরতহাল রির্পোট প্রস্তুত শেষে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজে ময়না তদন্ত শেষ করা হয়। গত ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬ টায় আমার বাবার মরদেহ পুলিশ আমার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেছে। ওই দিন রাতে আমার নিহত বাবার মরদেহ দাহ করেছি।
এ ব্যাপার সোমবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টায় বিরল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।যার মামলা নং-২০/১১৯, তাং ২১/৪/২০২৫।