রাজনীতি
নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে: তারেক রহমান
৯ আগস্ট, ২০২৫
3 মিনিট
ডেস্ক রিপোর্ট।। স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর এখন জনগণের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ডেস্ক রিপোর্ট।। স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার পর এখন জনগণের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা দেখছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পথে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ইনশাআল্লাহ আগামি রোজার আগে দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের অধিকারের প্রথম পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হবে।
আজ রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহের পাশের সড়কে প্রায় দেড় যুগ পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
দেশের ভঙ্গুর প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করা বিএনপির অন্যতম প্রধান লক্ষ্য উল্লেখ করে সম্মেলনে তারেক রহমান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। আপনারা পত্রপত্রিকায় দেখেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে নিয়ে সংস্কার কমিশনে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, যত সংস্কার আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তার অধিকাংশ সংস্কার বিএনপি আড়াই বছর আগেই জাতির সামনে রাষ্ট্র মেরামতের দফা হিসেবে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল। সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবের অধিকাংশ প্রস্তাব বিএনপির দেওয়া রূপরেখার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বিএনপিই সর্বপ্রথম দেশের মানুষের সামনে রাষ্ট্র মেরামত দফা হিসেবে পরিচিত ৩১ দফা উপস্থাপন করেছিল। কারণ, আমরা বিশ্বাস করি, এই দেশকে যদি সামনে এগিয়ে নিতে হয়, দেশের মানুষের জীবনব্যবস্থার যদি উন্নতি করতে হয়, তাহলে কতগুলো ব্যাপারে রাষ্ট্রের সংস্কার করতে হবে।
ক্ষমতায় গেলে বিএনপি রাষ্ট্র মেরামত ও পুনর্গঠনের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেবে বলে জানিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার দেশের সব সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিচার বিভাগ, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা-প্রতিটি ক্ষেত্রেই সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে পুনর্গঠন করতে হবে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান আরও বলেন, দেশের মানুষ আজ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। তারা বিশ্বাস করে, একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, একমাত্র আপনাদের প্রিয় দল বিএনপির পক্ষেই সম্ভব ধীরে ধীরে এই দেশকে আবার গড়ে তোলা। তিনি বলেন, শুধু নির্বাচন হলেই হবে না। ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করলেই হবে না। সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ আছে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে। তা না হলে দেশ পিছিয়ে যাবে, দেশের মানুষ আরও কষ্ট পাবে।
সম্মেলনে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণের আস্থা অর্জন করে আগামি নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের কাজে হাত দিতে হবে। আজকে এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আমরা দুটি শপথ নিচ্ছি। এক, আমরা সকলে ইনশা আল্লাহ ঐক্যবদ্ধ থাকব। দুই, আগামি দিনে ইনশা আল্লাহ জনগণের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে আমরা দেশ পুনর্গঠন করব।
রাজশাহী অঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশের ওপর ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাব তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, এই রাজশাহী মহানগর, এই রাজশাহী জেলা, রাজশাহী বিভাগ, আমরা দেখেছি কীভাবে ফারাক্কার কারণে আজ পদ্মা নদী শুকিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি কীভাবে একসময় সুজলা-সুফলা সবুজের ছায়া ছিল, সেখানে এই পানির অভাবে, পদ্মা নদীর পানির অভাবে কীভাবে চারদিকে মরুভূমি হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে, আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে যাব দরকার হলে, আমরা জাতিসংঘে যাব দরকার হলে। আমাদের পানির হিস্যা বের করে নিয়ে আসতে হবে।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মামুন-অর-রশিদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির সমন্বয়কারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) সৈয়দ শাহীন শওকত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রমুখ।