দেশ-বিদেশের খবর
পোপ ফ্রান্সিসের চিরপ্রস্থান
২১ এপ্রিল, ২০২৫
2 মিনিট
২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
রোমান ক্যাথলিক চার্চের প্রথম লাতিন আমেরিকান নেতা পোপ ফ্রান্সিস ৮৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন।
ভ্যাটিকানের কার্ডিনাল কেভিন ফারেল সোমবার এক বিবৃবিতে পোপের মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে বলেন, "আজ সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) রোমের বিশপ ফ্রান্সিস স্বর্গীয় পিতার কাছে ফিরে গেছেন।"
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে ভ্যাটিকানে ফিরেছিলেন এক যুগ ধরে রোমান ক্যাথলিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসা ফ্রান্সিস। রোববার হুইলচেয়ারে বসে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার বারান্দা থেকে উচ্ছ্বসিত জনতার উদ্দেশে হাত নেড়ে ইস্টারের শুভকামনা জানিয়েছিলেন। তার পরদিনই তার মৃত্যুর খবর এল।
আর্জেন্টিনার ধর্মযাজক জর্জ মারিও বারগোলিও ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ পোপ নির্বাচিত হয়ে ফ্রান্সিস নাম নেন।
রোমের বিশপ হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চ এবং সার্বভৌম ভ্যাটিকান সিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
২০১৭ সালে বাংলাদেশেও এসেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
১৯৩৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে পোপ ফ্রান্সিসের জন্ম। ক্যাথলিক পুরোহিত হিসেবে তার অভিষেক হয় ১৯৬৯ সালে।
পুরো আমেরিকা অঞ্চল এবং দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নির্বাচিত প্রথম পোপ তিনি, সে কারণে কেউ কেউ তাকে দেখতেন ‘বহিরাগত’ হিসেবে। আবার অনেকের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘গরিবের বন্ধু’ একজন ধর্মযাজক হিসেবে।
পোপ হিসেবে ফ্রান্সিস সরল জীবনযাপন বেছে নিয়েছিলেন। আগের পোপদের মত জাঁকজমকপূর্ণ অ্যাপার্টমেন্টে না থেকে সাধারণ ধর্মযাজকদের আবাসে বসবাস করতেন। তার ভাষায়, এটা ছিল তার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
পোপ ফ্রান্সিস যখন দায়িত্ব নেন, ক্যাথলিক চার্চ তখন যৌন কেলেঙ্কারি আর ভ্যাটিকান প্রশাসনের কোন্দলে ক্ষতবিক্ষত। তিনি পরিবর্তনের ম্যান্ডেট নিয়ে আসেন এবং চেষ্টা করেন শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে।
তবে রক্ষণশীলদের সমালোচনার তীরে তাকে বিদ্ধ হতে হয়েছে বার বার। চার্চের ঐতিহ্য ধ্বংসের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে। আবার অনেকে অভিযোগ করেছেন, পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিলেও যথেষ্ট পরিবর্তন তিনি আনতে পারেননি।
এর মধ্যেও পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। বহু দেশ সফর করে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও শান্তির বার্তা তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং অভিবাসীদের পক্ষে তিনি ছিলেন সরব।