ব্যবসা
সিগারেটের ব্যবহার কমাতে মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব
২৫ মার্চ, ২০২৫
2 মিনিট
সিগারেটের মূল্যের নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে রাজস্ব বাড়ার পাশাপাশি তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে নিরুত্সাহিত হবে বলে মনে করছে সংগঠন দুটি।
আসছে বাজেটে সিগারেটের মূল্যস্তর চারটি থেকে কমিয়ে তিনটি করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান ‘প্রগতির জন্য জ্ঞান’ (প্রজ্ঞা) ও ‘অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স’ (আত্মা)।
এর ফলে ব্যবহারকারীরা নিরুৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি রাজস্ব আয়ও বাড়বে বলে করছে সংগঠন দুটি।
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ‘প্রজ্ঞা’ ও ‘আত্মার’ সদস্যরা বলেন, সিগারেটে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম মূল্যস্তর থাকায় তামাক কর ও মূল্য পদক্ষেপ সঠিকভাবে কাজ করে না। নিম্ন ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে দাম বাড়ানো হলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে এবং তরুণ ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে নিরুত্সাহিত হবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) রিসার্চ ডিরেক্টর ও স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহফুজ কবীর বলেন, “বর্তমানে ৮০ শতাংশের বেশি সিগারেট ব্যবহারকারী নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের ভোক্তা। এই দুই স্তরকে একত্রিত করে দাম বৃদ্ধি করা হলে রাজস্ব আয় বাড়বে এবং সিগারেটের ব্যবহার কমবে। বর্ধিত রাজস্ব চলমান বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।”
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা বলেন, “সরকারের উচিত হবে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সব ধরনের তামাক পণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া।”
সংবাদ সম্মেলনে সিগারেটের মূল্যের নিম্ন স্তর ও মধ্যম স্তরকে একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ, উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকায় অপরিবর্তিত রাখা এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার প্রস্তাবও করা হয়।
সেইসঙ্গে ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা এবং ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা, প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা এবং ১০ গ্রাম গুলের খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার কথা বলা হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ ছাড়া সকল তামাকপণ্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ‘আত্মার’ কনভেনর মতুর্জা হায়দার লিটন, কো-কনভেনর মিজান চৌধুরী, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়েরসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। ‘আত্মার’ কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন ‘প্রজ্ঞার’ তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।