Thin-Left
Thin-Right

Advertisement

Top Advertisement
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে দিনভর সংঘর্ষে ৪ জন নিহত
জাতীয়

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে দিনভর সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

১৫ জুলাই, ২০২৫
3 মিনিট

মানবজমিন।। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেশ বিশ্বাস।

মানবজমিন।। গোপালগঞ্জে সংঘর্ষের ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেশ বিশ্বাস। চার জনের মৃতদেহ সদর হাসপাতালে এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। নিহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অনেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের সংখ্যা জানাতে পারেননি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। নিহতদের মধ্যে শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা দীপ্ত সাহা ও কোটালি পাড়ার রমজান কাজীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ দিনভর উত্তেজনা ও সংঘর্ষের পর রাত থেকে কারফিউ জারি করেছে সরকার। হামলা সংঘর্ষের পর এনসিপি নেতারা সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহায়তায় গোপালগঞ্জ ত্যাগ করে খুলনা পৌঁছেছেন। প্রথম আলো জানিয়েছে, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র প্রথম আলোকে এ কথা জানিয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮) ও টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১)। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁরা গুলিবিদ্ধ ছিলেন। প্রথম আলো স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নিহত দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হয়। পরে রাত সাড়ে সাতটার দিকে অপরজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। হাসপাতালের কর্মকর্তা জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, আরও ৯ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের অস্ত্রোপচার চলছে। মৃত্যুর তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি। তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবিরকে কল দিলে তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি। নিহত দীপ্ত সাহার চাচা হাসপাতালে প্রথম আলোকে বলেন, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তাঁর পেটে গুলি লাগে। নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী প্রথম আলোকে বলেন, আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব? নিহত সোহেল মোল্লা গোপালগঞ্জ শহরের চৌরঙ্গী এলাকার কেরামত আলী প্লাজায় মোবাইল ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর পরিচয় নিশ্চিত করেছেন একই মার্কেটের দোকানদার জনি খান। এর আগে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এনসিপির নেতা-কর্মীরা অন্যদিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই। এর আগে বেলা পৌনে ২টার দিকে সমাবেশ শুরুর আগে ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যান। সে সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময়ে মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতা-কর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যাঁরা হামলা চালান, তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে এনসিপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন। ওই সময় হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতা-কর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে সমাবেশ করে এনসিপি। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে। এর আগে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আগুন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট সড়কের সদর উপজেলার কংশুরে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের গাড়ি পোড়ানোর একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায়, গাড়ি পোড়ানোর সময় সেখানে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের গোপালগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. পিয়াল লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। অন্য আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, আমরা পিয়াল ভাইয়ের সাথে আছি।

Share this article

জাতীয়

জাতীয় বিভাগের সর্বশেষ খবর এবং আপডেট পেতে এই বিভাগে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Advertisement

Sidebar Advertisement