Thin-Left
Thin-Right

Advertisement

Top Advertisement
তদন্তে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেনা সদরের ব্রিফিং
জাতীয়

তদন্তে সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে গুমে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেনা সদরের ব্রিফিং

২ জুলাই, ২০২৫
4 মিনিট

প্রথম আলো।। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য প্রেষণে অন্য বাহিনীতে গিয়ে গুমে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

প্রথম আলো।। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যেসব সদস্য প্রেষণে অন্য বাহিনীতে গিয়ে গুমে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেল তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ বৃহস্পতিবার (০৩ জুলাই) সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে এ কথা বলা হয়েছে। দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে এই ব্রিফিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন সদস্য ডেপুটেশনে (প্রেষণে) যেসব সংস্থায় থাকে, এই সংস্থাগুলো আমাদের সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। কিছু সেনাসদস্য যাঁরা ডেপুটেশনে ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ এসেছে। তাঁদের বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। এই তদন্তে যদি তাঁদের বিরুদ্ধে গুমের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ব্রিফিংয়ে ‘মব ভায়োলেন্স’ (উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতা) বিষয়ে সাংবাদিকেরা একাধিক প্রশ্ন করেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে মব তৈরি করে হেনস্তার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে হেনস্তা করার ঘটনায় যে ৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছিল, তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনী। আইনগত প্রক্রিয়ার জন্য তাঁকে আদালতে হস্তান্তর করা হয়। পরে আসামি জামিন পেলে সেনাবাহিনীর কিছু করার থাকে না। তবে সেনাবাহিনী যেকোনো মব ভায়োলেন্স এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী ঘটনার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে। চট্টগ্রামের পটিয়ার ঘটনা সম্পর্কে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, পটিয়ার ঘটনায় সেনাবাহিনী দ্রুত সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ ছিল। সেনাবাহিনী গিয়ে সেই অবরোধ মুক্ত করে জনদুর্ভোগ দ্রুত কমিয়ে আনে। ভবিষ্যতে এটি অব্যাহত থাকবে। কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে সংঘটিত নারী নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সেনাবাহিনী স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, মূল আসামি ফজর আলী ও আরও চারজন ভিডিও ধারণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনাবাহিনী ভুক্তভোগী পরিবারের সুরক্ষা ও সামাজিক মর্যাদা রক্ষায় কার্যক্রমে পূর্ণ সহযোগিতা করছে। ব্রিফিংয়ে জাতীয় নির্বাচন-সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক প্রশ্ন এসেছে। এসব প্রশ্নের জবাবে কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দেখুন, এটি (জাতীয় নির্বাচন) একটি রাষ্ট্রীয় বিষয় এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারকেরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে আমরা মনে করি। নির্বাচন কমিশন থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্দেশনা পাওয়া মাত্র আমরা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য সব ধরনের সহায়তা আমরা করব। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ও পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে লুট হওয়া ৮০ শতাংশ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি যে ২০ শতাংশ অস্ত্র ও গুলি রয়েছে, সেগুলো নির্বাচনের আগে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। অস্ত্রগুলো উদ্ধার হলে সেটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সেনাবাহিনীর চলমান আভিযানিক কার্যক্রম সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে আজকের এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে বলা হয়, চিহ্নিত সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার অভিযানে গত দুই সপ্তাহে সেনাবাহিনী ২৬টি অবৈধ অস্ত্র ও ১০০ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করে। গত আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৬৯২টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৪টি গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৪৬ জনকে। এর মধ্যে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, ডাকাতসহ অন্যান্য অপরাধী রয়েছে। এ পর্যন্ত মাদকসংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৫ হাজার ৫২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত দুই সপ্তাহে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের পাশাপাশি সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত অভিযোগে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ইউপিডিএফের একটি ক্যাম্প ধ্বংস করেছে। রাঙামাটিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে একজন সেনাসদস্য গুলিবিদ্ধও হয়েছেন। সেনাবাহিনীর অভিযানের ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এর ফলে কেএনএফের (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) ভয়ে নিজেদের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়া বান্দরবানের ১৩৮ জন বম উপজাতি ফিরে এসেছেন। সেনাবাহিনী তাঁদের সর্বাত্মক সহায়তা করছে। আজ ভোরে পার্বত্য চট্টগ্রামে কেএনএর (কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি) বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে সংগঠনটির দুজন সদস্য নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ব্রিফিংয়ে বলা হয়, গতকাল বুধবার রাত থেকে পরিচালিত অভিযানে আজ (০৩ জুলাই) ভোরে কেএনএফের সঙ্গে সেনাবাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে কেএনএফের একজন ‘মেজর’ পদবীর কমান্ডার নিহত হয়েছেন। অভিযানে ৩টি অত্যাধুনিক এসএমজি, ১টি চায়নিজ রাইফেল, ৩৬৪টি গুলিসহ বেশ কিছু সামরিক সরঞ্জামাদি ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানটি চলমান আছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

Share this article

জাতীয়

জাতীয় বিভাগের সর্বশেষ খবর এবং আপডেট পেতে এই বিভাগে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Advertisement

Sidebar Advertisement