Thin-Left
Thin-Right

Advertisement

Top Advertisement
অবিশ্বাস্য নৃশংসতা, মানবাধিকার হরণ ও ন্যায়বিচার
মতামত

অবিশ্বাস্য নৃশংসতা, মানবাধিকার হরণ ও ন্যায়বিচার

২ আগস্ট, ২০২৫
7 মিনিট

লিখাঃ কামাল আহমেদ

কোনো রাজনীতিবিদ যেমন হঠাৎ করেই স্বৈরশাসক হয়ে যান না, তেমনি কোনো দলও রাতারাতি ফ্যাসিবাদী দলে রূপান্তরিত হয় না। একটা উল্লেখযোগ্য সময় ধরে এই রূপান্তর ঘটে। বাংলাদেশে পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা এবং তাঁর দল আওয়ামী লীগও বেশ কিছুটা সময় ধরে ফ্যাসিস্ট হিসেবে রূপান্তরিত হয়েছে। স্টিভেন লেভিৎস্কি ও ড্যানিয়েল জিবলেট যদি তাঁদের বই হাউ ডেমোক্রেসিস ডাইÑএর নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেন, তাহলে সম্ভবত বাংলাদেশে শেখ হাসিনার জনপ্রিয় ভোটে নির্বাচিত হওয়া, তারপর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতা একে একে ধ্বংস করে কুক্ষিগত করা, দল ও সরকারে একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো তাজা উদাহরণ হিসেবে খুব কাজে লাগবে। জাতীয় সংসদ, আদালত, নিরাপত্তা বাহিনী, গণমাধ্যমÑকোনো কিছুরই তাঁর অঙ্গুলিহেলনের বাইরে চলার সামর্থ্য অবশিষ্ট ছিল না। পাশাপাশি ভূরাজনীতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিসরেও তাঁকে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি। একদিকে বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের অগাধ আ¯’া ও সমর্থন যেমন তাঁর জন্য আশীর্বাদ হয়ে থেকেছে, তেমনি প্রভাবশালী দেশগুলোর রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সামরিক শিল্প ও ব্যবসায়িক নানা ধরনের লেনদেনে ভর করে আন্তর্জাতিক পরিসরে বৈধতার প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ায় তেমন একটা সমস্যা হয়নি। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম দফায় ক্ষমতারোহণও দিয়েছে বাড়তি সুবিধা, কেননা তখন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলোতে নাক না গলানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পশ্চিমা দেশগুলোর প্রায় সবাই তখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চেয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নীতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণেও শেখ হাসিনা তাঁর রক্ষণশীল মুসলিমপ্রধান দেশে ধর্মবাদী জঙ্গিবাদের হুমকির বিষয়টিকে নিজের ক্ষমতা সংহত করার কাজে যথাসম্ভব ব্যবহার করেন। বিচারহীনতার অন্যতম একটি কারণ যেহেতু বৈষম্যÑক্ষমতাধরের সঙ্গে ক্ষমতাহীনের ফারাক, সে কারণে বৈষম্যমুক্তির জন্য ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগ, সব অপরাধের বিচার তাই এখন অগ্রাধিকারে থাকা চাই। আর যাঁরা দেশের বাইরে পালিয়ে আছেন, তাঁরা যে দেশেই থাকুন, সর্বজনীন এখতিয়ারের আওতায় তাঁদেরও সে দেশেই বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ সচল ও জোরদার করা দরকার। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বিনা বিচারে আটক, গণহারে গ্রেপ্তার, নির্যাতনÑনিপীড়নের সবকিছুই তিনি নিষ্ঠুরভাবে প্রয়োগ করতে থাকেন। নির্যাতিত ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার পাওয়ার সব পথ বন্ধ হয়ে যায়। রাজপথে আন্দোলনের চেষ্টাÑতা সে রাজনৈতিক বা অরাজনৈতিক যা-ই হোক না কেন, তার পরিণতি হয়েছে নিষ্ঠুর দমন। ২০১৮ সালে ছাত্র-কিশোরদের ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ আন্দোলনও ছাত্রলীগের পেটোয়া বাহিনী দিয়ে কীভাবে দমন করা হয়েছে, তা এখনো বহু অভিভাবকের দুঃস্বপ্ন। এই বিচারহীনতার সময়ে দেশের বাইরে প্রবাসীদের অনেকেই বিকল্প খুঁজতে থাকেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সঙ্গে অনেকে যোগাযোগ গড়ে তোলেন। নিপীড়ন-নির্যাতনে জড়িতদের আন্তর্জাতিক পরিসরে বিচার বা কোনো ধরনের শাস্তির মুখোমুখি করা যায় কি না, তা নিয়ে খোঁজখবর ও চিন্তা শুরু হয়। পাশাপাশি যাত্রা শুরু হয় এক্সাইল মিডিয়া বলে পরিচিতি পাওয়া নির্বাসিতদের গণমাধ্যমের। এক্সাইল মিডিয়ার যাত্রা প্রধানত শুরু হয় সুইডেনে, এক-এগারোর শাসনামলে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনের শিকার তাসনিম খলিল এবং ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান প্রতিষ্ঠিত নেত্র নিউজের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে যাত্রার শুরুতেই নেত্র নিউজ আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়ে। কেননা, শুরুতেই তারা আওয়ামী লীগের দুর্নীতির একটা খ-চিত্র তুলে ধরার অংশ হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের ঘড়িবিলাসের সচিত্র প্রতিবেদন করে, যে বিলাসিতা অতিধনী ছাড়া আর কারও পক্ষেই সৎ উপার্জনে সম্ভব নয়। ২০১৮ সালের যে নির্বাচন নিশিভোটের জন্য পরিচিত, সেই নির্বাচনের আগে দেশের ভেতরে ক্রসফায়ারে হত্যার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়। অধিকাংশ বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ ওঠে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে, যে কারণে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাহিনীটিকে ‘ডেথ স্কোয়াড’ নামে অভিহিত করে। তখন ওই বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন কুখ্যাতি পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা বেনজীর আহমেদ। ২০২০ সালে তাঁকে যখন পুলিশের মহাপরিদর্শক নিয়োগ করা হয়, তখন অনুসন্ধান করে দেখা গেল যে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে র্যাবের বিরুদ্ধে যত ক্রসফায়ারের (১,১৫৮ জন) অভিযোগ, তার এক-তৃতীয়াংশই ঘটেছে বেনজীরের নেতৃত্বের পাঁচ বছরে, ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়কালে। মারণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে তাঁর প্রকাশ্য কিছু ঘোষণা বা নির্দেশনাও ছিল অবিশ্বাস্য রকমের নিষ্ঠুর। ২১ আগস্ট ২০২০ তারিখে বাংলাদেশের পুলিশপ্রধানের পরিচিতির একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করা হয় নেত্র নিউজে। তাতে বলা হয়, যাঁর অধীনে (কমান্ডে) সংঘটিত অগণিত হত্যার জন্য তাঁর বিচার করার কথা, তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে পুলিশপ্রধান। এর বছরখানেক পর ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র বাহিনী হিসেবে পুরো র্যাব, বেনজীর এবং র্যাবের অপর পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ ছাড়া বেনজীরের বিরুদ্ধে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আলাদা করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য যে সুখকর হয়নি, তার প্রমাণ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সময়ে দৃশ্যমান হয়েছে। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের চেষ্টায় শেখ হাসিনা নিজে এবং তাঁর সরকার সাধ্যমতো চেষ্টা করেও সফল হয়নি। এতে করে ওই বাহিনীতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অভ্যাসে পরিবর্তন আসে। ক্রসফায়ার পুরোপুরি বন্ধ না হলেও তা নাটকীয়ভাবে কমে যায়। গুম হওয়া ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে তাঁদের স্বজনেরা ‘মায়ের ডাক’-এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন। এ সময় নিখোঁজ বাবা পারভেজ হোসেনের কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে আদিবা ইসলাম। ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের নিস্পৃহতায় সরকারবিরোধী এবং ভিন্নমতের সবার ওপর হতাশার ছায়া চেপে বসে। শেখ হাসিনার ‘কার্যত রাজতন্ত্র’ আমৃত্যু টিকে থাকবে বলেই ধরে নেওয়া হয়। বিতর্কিত নির্বাচনের মাস তিনেক আগে বিরোধীদের আন্দোলনের মধ্যে বিমান বিক্রির আশায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এক সরকারি সফরে ঢাকায় হাজির হলে স্বৈরশাসক আরও আ¯’া ফিরে পায়। সুতরাং নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের একমাত্র খোলা পথ থাকে বিদেশে বিচার পাওয়ার আশা ও চেষ্টা। সর্বজনীন এখতিয়ার বা ইউনিভার্সাল জুরিসডিকশনের আওতায় অন্য কোনো দেশে, বিশেষত ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকায় স্বৈরাচারী সরকারের যেকোনো সদস্যকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টায় মনোযোগী হওয়াই ছিল তখন একমাত্র পথ। আমাদের উপমহাদেশের আদালতগুলো যথেষ্ট স্বাধীন হলে এবং ভারতে মানবাধিকার সংগঠকেরা উদ্যোগী হলে সে দেশে আশ্রয় নেওয়া রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচারও তত্ত্বগতভাবে সম্ভব। শ্রীলঙ্কায় সংখ্যালঘু তামিল জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর আন্তর্জাতিক এখতিয়ারে বিচারের লক্ষ্য সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করছে, এ রকম একটি সংগঠন হ”েছ ইন্টারন্যাশনাল ট্রুথ অ্যান্ড জাস্টিস প্রজেক্ট (আইটিজেপি)। এই সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মানবাধিকার আইনজীবী এবং জাতিসংঘের হয়ে বেশ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞ ইয়াসমিন সুকা ও বিবিসির সাবেক ঢাকা ও কলম্বো প্রতিনিধি ফ্রান্সিস হ্যারিসন। তাঁদের সঙ্গে বাংলাদেশে কাজ করা আরেক ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান এবং আমিও যুক্ত হই। মে মাসে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে বাংলাদেশে গুম ও ক্রসফায়ারের ঘটনাগুলোর মধ্যে যেগুলো সম্ভব, সেগুলোর সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের কাজ শুরু করা হবে। জুন মাসে আমরা কাজ শুরু করি। জুলাই আমাদের কাজের মুখ ঘুরিয়ে দেয়। ১৪ জুলাই গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে কোটা বিলোপের আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ ইঙ্গিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দেয়, তার পরদিন থেকেই আমরা একধরনের অ¯ি’রতায় ভুগতে থাকি। ছাত্রলীগকে দিয়ে আন্দোলনকারীদের শিক্ষা দেওয়ার ঘোষণা যে গুরুতর রূপ নিতে যা”েছ, তা অচিরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের হত্যা আন্দোলনকে যে নতুন মাত্রায় নিয়ে যা”েছ, তা অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। ইন্টারনেট সংযোগ বি”িছন্ন করার খবর এবং তার মধ্যেও ১৮ ও ১৯ জুলাইয়ের অবিশ্বাস্য নৃশংসতার ছবি সাইবারমাধ্যমে বি”িছন্নভাবে আসতে থাকে। আমরা সিদ্ধান্ত নিই, এ আন্দোলন দমনের সাক্ষ্যপ্রমাণ সংরক্ষণেই আমরা মনোযোগী হব। ডেভিড ঢাকায় কয়েকজন সাংবাদিককেও এ কাজে যুক্ত করেন। ৩৬ জুলাই পর্যন্ত আমরা শত শত ভিডিও, ছবি ও রিপোর্ট দেখি, পড়ি ও সংরক্ষণ করি। ১৮ ও ১৯ জুলাই জাতিসংঘের লোগো-সংবলিত সামরিক যান ও হেলিকপ্টার ব্যবহারের ছবি দেখে এবং তার সত্যতা যাচাই করে আমাদের বিস্ময়ের সীমা থাকে না। হাসিনা সরকার কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল, তার বিবরণ স্মরণ করলেও গা শিউরে ওঠে। একটির চেয়ে আরেকটি ঘটনা নৃশংস থেকে নৃশংসতর হতে থাকে। নিষ্ঠুরতার নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি হয়। ব¯‘ত স্বাধীন বাংলাদেশ এমন নৃশংসতা আর কখনো দেখেনি। আমরাও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এবং ইউরোপীয় কমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলি। কিছু কিছু তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। আইটিজেপি বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া ভিডিও ফুটেজ, ¯ি’র চিত্র, বিবরণী সংরক্ষণের পাশাপাশি সেগুলোর সঙ্গে সরাসরি জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাঁদের ভাষ্য গ্রহণ, অস্ত্রবিশেষজ্ঞ, অপরাধের ঘটনা বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ ফরেনসিক এক্সপার্ট এবং প্রয়োজনে স্যাটেলাইটের সাহায্যে সঠিক ¯’ান নির্ধারণের মতো খুঁটিনাটি যাচাইয়ের উদ্যোগ নেয় এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের সঙ্গে মিলে দুটি ঘটনার ফরেনসিক বিশ্লেষণ সংকলনের মাধ্যমে তথ্যচিত্র তৈরি করে। সেগুলোর একটি যাত্রাবাড়ীর হত্যাযজ্ঞ, অপরটি গাজীপুরে কিশোর হৃদয় আলী হত্যার ঘটনা। দুটোই শক্তিশালী প্রমাণ হিসেবে ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে। বলে রাখা ভালো, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের জন্য ডাক পড়ায় অক্টোবর থেকে তাদের সঙ্গে থাকা আমার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। স্বৈরশাসনের পতন ঘটানোয় যাঁরা গুলির মুখে বুক পেতে দিয়ে অসমসাহসের সঙ্গে অত্যাচারীর দর্পচূর্ণ করে দিয়েছেন, তাঁদের বীরত্বের কোনো তুলনা চলে না। তবে সেখানেই শেষ নয়। এখন প্রয়োজন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা-বাবা, মেহেদি হাসানের স্ত্রী কিংবা শহীদ মুগ্ধর ভাই স্নিগ্ধর পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি তাঁদের চোখেমুখে বিচার পাওয়ার আকুতি। বিচারহীনতার অন্যতম একটি কারণ যেহেতু বৈষম্যÑক্ষমতাধরের সঙ্গে ক্ষমতাহীনের ফারাক, সে কারণে বৈষম্যমুক্তির জন্য ন্যায়বিচারের প্রশ্নটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব অভিযোগ, সব অপরাধের বিচার তাই এখন অগ্রাধিকারে থাকা চাই। আর যাঁরা দেশের বাইরে পালিয়ে আছেন, তাঁরা যে দেশেই থাকুন, সর্বজনীন এখতিয়ারের আওতায় তাঁদেরও সে দেশেই বিচারের মুখোমুখি করার উদ্যোগ সচল ও জোরদার করা দরকার। অপরাধীর নিরাপদ আশ্রয় যেন ক্রমেই সংকুচিত হয়ে যায়। কামাল আহমেদ : সিনিয়র সাংবাদিক ও গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান। সৌজন্যে প্রথম আলো

Share this article

মতামত

মতামত বিভাগের সর্বশেষ খবর এবং আপডেট পেতে এই বিভাগে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Advertisement

Sidebar Advertisement