Thin-Left
Thin-Right

Advertisement

Top Advertisement
ড: ইউনূস এমন দেশ চান, যেখানে ধর্মীয় উৎসবে ‘নিরাপত্তার ঘেরাটোপ’ লাগে না
জাতীয়

ড: ইউনূস এমন দেশ চান, যেখানে ধর্মীয় উৎসবে ‘নিরাপত্তার ঘেরাটোপ’ লাগে না

১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
3 মিনিট

“যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার।”

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এমন বাংলাদেশ তিনি দেখতে চান, যেখানে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার আয়োজন করতে হয় না। “আমরা চাই না নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। আমরা চাই নাগরিক হিসেবে মুক্তভাবে যার যার ধর্ম পালন করতে। এ অধিকার আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।“ বাসস জানিয়েছে, শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে মঙ্গলবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তার আগে তিনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী এবং ধর্ম, মত বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না। “আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পুরো জাতি একটি পরিবার। পরিবারের ভেতরে মতভেদ থাকতে পারে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পরিবার একটি অটুট জিনিস—এটাকে কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা যেন জাতি হিসেবে এই অটুট পরিবার হয়ে দাঁড়াতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।” তিনি বলেন, “যত ধর্মীয় পার্থক্য থাকুক, মতের পার্থক্য থাকুক, রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার। রাষ্ট্র দায়িত্ববদ্ধ সবাইকে সমান মর্যাদা দেওয়ার জন্য। সে যেই ধর্মেই বিশ্বাস করুক, যে মতবাদেই বিশ্বাস করুক, ধনী হোক কিংবা গরিব–রাষ্ট্রের কাছে সে একজন নাগরিক। নাগরিকের সকল অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে। “রাষ্ট্র আমাদের তালিকা করে দিয়েছে আমার প্রাপ্য কী। কোনো সরকারের অধিকার নেই কাউকে বঞ্চিত করার, সামান্যতম পরিমাণেও নয়। আমরা নাগরিক–আমাদের প্রতি কোনো রকম বৈষম্য করা যাবে না। এ অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবসময় সোচ্চার থাকতে হবে।” সে কারণে অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যত কথাই বলুন, তার মধ্যে বারে বারে বলুন–‘আমি এ দেশের নাগরিক, আমার সংবিধান প্রদত্ত সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে’। তখন দেখবেন সবাই আপনাদের সঙ্গী হবে। সারা দেশের মানুষ একসঙ্গে থাকবে, কারণ সবার সমস্যাই একই, নিজের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।” নাগরিক অধিকারের গুরুত্ব তুলে ধরে ইউনূস বলেন, “আমরা বারবার লাঞ্ছিত হই, অপমানিত হই, নানা বৈষম্যের শিকার হই। কেন? কারণ নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে আমরা হতাশ হয়ে গেছি। এখন আর হতাশ হওয়া চলবে না। নতুন বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল—সবার নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা।” নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে এখন যেভাবে পূজামণ্ডপ ঘিরে পুলিশ মোতয়েন করতে হয়, সে দিকে ইংগিত করে ইউনূস বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের ভূমিকা পালন করছে, আমরা এজন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু আমাদের এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে মানুষের ধর্মীয় উৎসব পালনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ঘেরাটোপের প্রয়োজন হবে না।” ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্টীতে দেবী দুর্গার অকাল বোধনে শুরু হবে এবারের শারদীয়া দুর্গাপূজা। তার আগেই ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শনে আসার কারণও ব্যাখ্যা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এবার হয়ত আমাকে এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। আমি বললাম, যাবই। এই আনন্দ থেকে আমি নিজেকে দূরে রাখতে চাইনি। “শারদীয় দুর্গাপূজার সময়ে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে সরকার প্রধান হিসেবে আমাকে থাকতে হবে, তাই আমি আগেভাগে এসেছি আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।” মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দে বক্তব্য দেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Share this article

জাতীয়

জাতীয় বিভাগের সর্বশেষ খবর এবং আপডেট পেতে এই বিভাগে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Advertisement

Sidebar Advertisement