Thin-Left
Thin-Right

Advertisement

Top Advertisement
পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধীদের অবরোধ, ৮ ঘণ্টা ধরে অচল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক
জাতীয়

পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধীদের অবরোধ, ৮ ঘণ্টা ধরে অচল চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

১ জুলাই, ২০২৫
4 মিনিট

ডেস্ক রিপোর্ট।। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে ৮ ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।

ডেস্ক রিপোর্ট।। পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে ৮ ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। আজ বুধবার (০২ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে পটিয়া বাইপাস এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ শুরু হয়। সন্ধ্যা ৬টার পর্যন্ত সড়কেই অবস্থান করছেন তারা। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও র্যাবের সদস্যরা রয়েছেন। জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (০১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টা ও সাড়ে ১১টায় পটিয়া থানা-পুলিশের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের দুই দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ১৯ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে উভয় পক্ষ। তবে নেতা-কর্মীদের দাবি, পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ বলছে, নেতা-কর্মীরা ‘মব’ সৃষ্টি করছিল। এর প্রতিবাদে আজ পটিয়া থানা ঘেরাওয়ের ডাক দেয় সংগঠনটি। আজ সকাল ৯টার থেকেই থানা ঘেরাও শুরু করেন তারা। পরে খন্ড খন্ড মিছিলে এসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখানে স্লোগান দিয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূরের অপসারণ দাবি করেন তারা। আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় সরেজমিনে দেখা যায়, বাইপাস সড়কে পটিয়া মডেল মসজিদের সামনে মহাসড়কে অবস্থান করছেন নেতা-কর্মীরা। সেখানে আন্দোলনকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। অবরোধের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তবে পরীক্ষার্থী ও অ্যাম্বুলেন্স চলাচল করতে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অবরোধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারী ও যাত্রীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, যান চলাচল করতে না পারায় অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন। বিকেল ৪টার দিকে আবদুর রহমান নামের এক বাসচালক জানান, বেলা ১১টা থেকে আটকে আছেন। পণ্য নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন তিনি। বিক্ষোভের একপর্যায়ে বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খান তালাত মাহমুদ। তিনি বলেন, ওসি জায়েদ নূরের অপসারণ না হলে তারা সড়ক ছাড়বেন না। শুরুতে ১২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিলেও পরে তিনি অপসারণের আগপর্যন্ত তারা সরবেন না বলে ঘোষণা দেন। বেলা তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্লাবন কুমার বিশ্বাস, পটিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান, সেনাবাহিনী ও র্যাব আসে। তারা আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীরা জানান, ওসির অপসারণ আদেশ এলে তারপর তারা সরবেন। জানা গেছে, গতকাল (০১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে ছাত্রলীগের এক নেতাকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। তবে ওই ছাত্রলীগ নেতার নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে চায়নি। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ ওই ছাত্রলীগ নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে পটিয়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে থেকে ছাত্রলীগের ওই কর্মীকে আটক করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। পরে তাকে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, তাকে থানায় আনার পর পুলিশ মামলা নেয়নি। এ নিয়ে আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেন। এতে তাদের কয়েকজন আহত হয়। পুলিশের দাবি, মিছিল নিয়ে ওই ব্যক্তিকে মারতে মারতে থানার ভেতরে নিয়ে আসেন। তার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ করার অভিযোগ তোলা হয়। এ সময় তারা থানায় ভেতরে একপ্রকার ‘মব’ সৃষ্টি করে। তাই আইনের ভেতরে থেকে পুলিশ তাদের বোঝানোর চেষ্টা করে। এ বিষয়ে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, থানায় সে সময় সাতজন রিমান্ডের আসামি ছিল। তারা ছাত্রলীগ কর্মীকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে আসেন। আমরা বোঝানোর চেষ্টা করি, কিন্তু তারা থানার ভেতরে ঢুকে চড়াও হয়ে পড়েন। পুলিশের হামলার বিষয়ে ওসি বলেন, আইনের মধ্যে থেকে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকী বলেন, আমাদের কর্মীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। পুলিশ সূত্র জানায়, ওই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম দীপঙ্কর দে (২৯)। তিনি রাঙামাটি জেলার বনরূপা বাজার এলাকার মৃত গৌরাঙ্গ দে এর ছেলে। তবে তাদের পৈতৃক নিবাস পটিয়ার সুচক্রদন্ডি ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। তাকে ৫৪ ধারায় (সন্দেহজনক হিসেবে) আদালতে পাঠানো হয়েছে আজ বেলা ৩টায়। উল্লেখ্য, ১৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক পর্যটনসহ বিভিন্ন কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। দেশের বৃহত্তম পর্যটন শহর কক্সবাজার, পার্বত্য জেলা বান্দরবানে যাতায়াতের প্রধান সড়ক হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। পর্যটকের পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়িও চলাচল করে এই সড়ক দিয়ে। সওজের মতে, এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৮ হাজার ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি হাজারো পর্যটক এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করেন।

Share this article

জাতীয়

জাতীয় বিভাগের সর্বশেষ খবর এবং আপডেট পেতে এই বিভাগে নিয়মিত ভিজিট করুন।

Advertisement

Sidebar Advertisement