বিশেষ প্রতিবেদন।। ভারতের সঙ্গে সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে স্থল পথে চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এই ঘোষণা ১৪ দিনের জন্য বলবৎ থাকবে। এর আগে থেকেই ভারতের সঙ্গে আকাশপথে চলাচল বন্ধ হয়েছে। ভারতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বড় ধরনের অবনতি হওয়ায় বাংলাদেশ সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ভারতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এই ১৪ দিন মানুষের যাতায়াত বন্ধ থাকলেও পণ্যবাহী যানবাহন চলবে।
ভারতে গত তিন দিনে প্রায় ১০ লাখ মানুষের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৮৮৬ জনের। এই সময়ে এ ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৬২৪ জন। ভারতের রাজধানী দিল্লির হাসপাতালগুলোতে কোভিড রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহে টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে মার্চের শেষে এসে বাংলাদেশেও করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক তথ্য-উপাত্ত মূল্যায়ন করে একদল বিশ্লেষক বলছেন, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আছে। করোনাভাইরাস সম্পর্কিত বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক তথ্য উপাত্ত, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পদক্ষেপ, ভাইরাসের বিস্তারের ধরন – এমন নানা কিছু বিশ্লেষণ করে বিশ্লেষকদের দলটি যে সম্ভাব্য চিত্র তৈরি করেছে তাতে একথা বলা হয়।
বিশ্লেষক দলটির প্রধান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের শিক্ষক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেছেন, বাংলাদেশের বিশাল সীমান্ত ভারতের সাথে। তাই আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যতই বন্ধ থাকুক – তাতে সেখানকার ভাইরাস আসবে না এই নিশ্চয়তা নেই। ভারতে এর ব্যাপকভাবে বিস্তার হচ্ছে এবং সেখানে ভাইরাসের ডাবল ভ্যারিয়েন্টের কথা বলা হচ্ছে। অন্যদিকে আমরা আগে ধারণা দিয়েছিলাম যে সেকেন্ড ওয়েভের চূড়া বা পিক আসবে মে মাসের শেষে বা জুনের দিকে। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই স্বল্প মাত্রায় লকডাউনসহ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমাদের মডেল বলছে যে জুলাইতে আসতে পারে সেকেন্ড ওয়েভের পিক বা চূড়া। তবে স্বাস্থ্যবিধি সবাই ঠিক মতো মানলে সেটি তেমন খারাপ নাও হতে পারে।
এদিকে ভারত টিকা রপ্তানি বন্ধ রাখায় বাংলাদেশে টিকার মজুত কমে আসায় সোমবার (২৬ এপ্রিল) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া বন্ধ থাকবে। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে ২১ লাখ ডোজ টিকা আসবে বলে তারা প্রত্যাশা করছেন।