।। নিজস্ব বার্তা পরিবেশক।। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটির এক প্রতিবাদ সমাবেশে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সক্রিয় মদদ ও পরিকল্পনায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গি গোষ্ঠী বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন স্থানে হামলা ও কর্মকান্ড চালিয়ে গোটা উপমহাদেশে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। এই ষড়যন্ত্র রুখতে বাংলাদেশের সকল শ্রেণির প্রগতিশীল, শান্তিপ্রিয় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয় এই সমাবেশে থেকে।
ভারতের মুম্বাইয়ে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর পাকিস্তানি জঙ্গি হামলা এবং বাংলাদেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী তৎপরতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটি গুলশানে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামনে আজ সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দিলেও পুলিশের অনুরোধে সমাবেশস্থল পরিবর্তন করা হয়। গুলশান দুই নম্বরে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক। বক্তব্য রাখেন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সাংবাদিক বাসুদেব ধর, মোহাম্মদ ইসহাক খান, মতিলাল রায়, অধ্যাপক রজত সুর ও রোপেন রড্রিক্স। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন আশরাফ আলী লিয়ন।
মুম্বাইয়ে ঐ জঙ্গি হামলায় ১৬৬ জন নিহত হয়েছিলেন। পাকিস্তানি এই জঙ্গিরা সমুদ্রপথে হানা দিয়েছিল মুম্বাইয়ে। পাঁচতারা তাজ হোটেল ও আশেপাশে আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে জঙ্গিরা হামলা চালায়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে নববর্ষের অনুষ্ঠানে হামলা, ২০০৪ সালে দেশজুড়ে জঙ্গি হামলা, বঙ্গবন্ধু এভেনিউতে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, উদীচীর সমাবেশে হামলা ও ২০১৬ সালে গুলশানে জঙ্গি হামলা সবই এক সূত্রে গাঁথা। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অন্তত দেড় ডজন বার প্রাণনাশের চেষ্টা করা হয়। সর্বশেষ যড়যন্ত্র ছিল বঙ্গবন্ধু এভেনিউর সমাবেশে হামলা। এখানে আর্জেস গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। এই আর্জেস গ্রেনেড এসেছিল পাকিস্তান থেকে যা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। নেতাকর্মীরা ঘিরে রেখে নেত্রীর প্রাণ রক্ষা করেন।
বক্তাগণ আরও বলেন, পাকিস্তানি এই জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে মদদ দিচ্ছে চীন। যেমনটি ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ বাঙালি হত্যা ও লাখ লাখ নারী নির্যাতনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করেছিল চীন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই দেশটি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। চীনের সহায়তা পেয়ে পাকিস্তান আজও বেপরোয়া।
অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, ভারতকে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল করতে মুম্বাইয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। আর বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে এদেশেও বারবার জঙ্গি হামলা ও তৎপরতা চালানো হয়। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে পাকিস্তানকে পিছিনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা পছন্দ নয়। এই জঙ্গিবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের গণতন্ত্রমনা প্রগতিবাদী মানুষকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
পাকিস্তানি জঙ্গিবাদী ও সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে আজ ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাব এবং দেশের কয়েকটি জেলায়ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
রংপুর
রংপুর থেকে প্রহ্লাদ রায়।। রংপুর প্রেস ক্লাবের সামনে আজ সকালে বাংলাদেশ সচেতন নাগরিক কমিটি রংপুর শাখার উদ্যোগে সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ বিরোধী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির আহ্বায়ক বনমালী পালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সুব্রত শিশির, কাজল মাহমুদ, সুব্রত সরকার মুকুল, প্রহ্লাদ রায় প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব স্বপন কুমার রায়। মানববন্ধন থেকে বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে জঙ্গিগোষ্ঠী যাতে কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে না পারে তার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।